যখন প্রাকৃতিক উপকরণের সাথে আর কোন কিছু না মিশিয়ে সরাসরি প্রথম নির্যাস থেকে তেল তৈরি করা হয় তখন তাকে‘এক্সট্রা ভার্জিন’ বলে।
এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেলের উপকারিতা, ব্যবহার ও খাঁটি নারিকেল তেল কিভাবে চিনবেন তার বিস্তারিত:
#ওজন_কমাবে: এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেলে উচ্চ মাত্রায় স্বাস্থ্যকর স্যাচুরেটেট ফ্যাট থাকে যা শরীরে ক্ষতকির অন্যান্য ফ্যাট অপসারন করে আপনার ওজন কমাবে।
#ক্যালোরি_কমায়: মোটা হয়ে যাওয়া এখন বর্তমান বিশ্বে এখন একটি বিরাট স্বাস্থ্য সমস্যা, কিন্তু নারিকেল তেল নিয়মিত খেলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকবে, নারিকেল তেলে থাকে medium-chain triglycerides (MCT) , একটি সমীক্ষায় জানা গেছে ১৫-৩০ গ্রাম #MCT আপনার কোন চেষ্টা ছাড়াই 24 ঘন্টায় আপনার শরীর থেকে ১২০ ক্যালোরী পুড়িয়ে ফেলতে পারে।
#ক্ষুধা_ও_ফুড_ডিপ্রেশন_কমায়ঃ নারকিলে তেলের ফ্যাটি এসিডের খুবই মজার ও শক্তিশালী একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি আপনার শরীরে ক্ষুধা ও ফুড ডিপ্রেশন কমিয়ে দিবে, যা আপনার ওজন কমানোর জন্য ডায়েটিং এ খুবই সহায়ক এবং নারিকেল তেল ক্ষতিকারক অণুজীবকে হত্যা করে।
#পেটের_ক্ষতিকারক_চর্বি_কমায়: যেহেতু নারিকেল তেল ক্ষুধা কমিয়ে দেয়, কাজেই এটি প্রমানিত যে ওজন কমানোর জন্য খুবই সহায়ক। এটি আপনার ফিটনেসের শত্রু তলপটেরে চর্বি গলাতে অসাধারন ভূমিকা রাখে।
#কিটো_ডায়েট_করতেঃ যারা সারের ভিডিও দেখে কিটো ডায়েট করছেন, তারা জানেন #কিটো_ডায়েট এর খাদ্য রান্নায় বা #বুলেট_কফি তৈরিতে এই এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারবেন।
#সুস্থ্য_থাকতেঃ দীর্ঘ দিনের গবেষণায় জানা গেছে যে নিয়মিত নারিকেল তেল খাওয়া লোকেরা, নারিকেল তেল না খাওয়া লোকদের চেয়ে অনেক বেশি সুস্থ্য থাকে।
#হার্ট_সুস্থ্য_রাখে: নারিকেল তেল শরীরের উপকারী HLD কোলস্টেরেল উৎপাদন করে যা আমাদের হার্টের জন্য খুবই উপকারি। কয়কেটি গবেষণায় দেখা গেছে যে নারিকেল তেল রক্তে উপকারি HLD কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তুলে উন্নত বিপাকীয় কার্যক্রম বজায় রেখে নিশ্চিত ভাবে হার্টের সকল প্রকার রোগের ঝুকি মুক্ত রাখে।
#চুলের_যত্নে: বহুকাল ধরে চুলের যত্নে নারিকেল তেলকে সেরা বলা হয়। কারণ এতে রয়েছে প্রোটিন প্রপার্টিজ ও প্রাকৃতিক কন্ডিশনিং যুক্ত ফ্যাট যা বর্তমান সময় চুলের মূল সমস্যা প্রোটিন লস থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও নারিকেল তেলের লরিক এসিড চুলকে সহজে তেল চুষে নিতে সাহায্য করে, চুলকে সুস্থ্য, সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে নারিকেল তেল। এর আরও কিছু উপকারি দিক তুলে ধরা হল।
❈ ড্যামেজ চুল রিপেয়ার করতে এর জুড়ি নেই। এটি ন্যাচারাল কন্ডশিনার হিসাবে কাজ করে।
❈ চুলকে সর্ম্পূণ রূপে মশ্চারাইজ করে ঘন ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করে তুলে।
❈ বাহ্যিক দূষণের হাত থেকে চুলে রক্ষা করে।
❈ উকুনের হাত থেকে রক্ষা করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে উকুন প্রতিরোধে অন্য তেলের থেকে নারিকেল তেল ৪০% বেশি র্কাযকর।
❈ নারিকেল তেলে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ফ্যাঙ্গাস সিস্টেম থাকায় মাথার ত্বক সুস্থ্য রাখে ও খুশকি মুক্ত রাখে।
❈ চুলের প্রোটিন লস সিস্টেম থেকে রক্ষা করে।
❈ নিয়মিত মাথায় ম্যাসেজ করলে চুলের গ্রোথ ভালো হয়।
❈ চুলের ফ্রিজি ভাব কমায় নারিকেল তেল।
এক কথায় বলা যায়, চুলের যত্নে নারিকেল তেল অদ্বিতীয়।
#ত্বকের_যত্নে: শুস্ক ত্বকের আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে নারিকেল তেলের জুড়ি নেই, এটি একজিমা প্রতিরোধে সহায়ক। নারিকেল তেলে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের উপরে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করে। তাই ন্যাচারাল এন্টি ব্যাকটেরিয়াল লোশন হিসাবেও ব্যবহার করা যায়। ত্বকে এটি বেসিক লোশন হিসাবে কাজ করে।
#রূপচর্চায়ঃ রূপচর্চায়ও এই তেল ব্যাবহার হয়ে থাকে, এর কিছু ব্যাবহার তুলে ধরা হল।
❈ চোখের মেক-আপ তুলতে এটি ব্যবহার করা যায়। একটি তুলোয় তেল নিয়ে চোখের মেক-আপ ঘষে তোলা যায় ।
❈ ত্বকের যেসব জায়গায় দাগ, সেসব জায়গায় নারিকেল তেল নিয়মিত ঘষলে দাগটি হালকা হয়ে যায়।
❈ গর্ভাবস্থায় পেটের চামড়া ফেটে গিয়ে দাগ হয়। এসময় নিয়মিত নারিকেল তেল পেটে মালিশ করলে এই দাগগুলো হালকা হয়ে যায়।
❈ এই তেলে আছে SPF 4 তাই সানস্ক্রিন হিসাবেও কাজ করে।
❈ যৌনাঙ্গে ঈস্ট বা ঈস্ট ইনফেকশন হলে ওই জায়গায় বাহ্যিকভাবে নারিকেল তেল লাগালে উপকার পাওয়া যায়। নারিকেল তেল ঈস্টকে ধ্বংস করে।
❈ রাত্রিকালিন ফেসিয়াল ময়েশ্চারাইজার হিসাবে ব্যবহার করা যায়।
❈ গোসলের আগে সমপরিমাণ নারিকেল তেল ও চিনি মিশিয়ে শরীরে ঘষা যায়। এটি একটি স্ক্রাবার হিসাবে কাজ করে। বিশেষ করে শীতকালে এটি খুবই উপকারী।
কাজইে বুঝতে পারছেন নারিকেল তেল কতটা উপকারী আপনার স্বাস্থ্যের জন্য, তাই পুরাতন মান্ধাতা আমলের ভুল অভ্যাস গুলি বাদ দিয়ে আজই আপনার খাবারের তালিকায় নারিকেল তেল যোগ করুন, তবে তেলটি অবশ্যই হতে হবে নির্ভেজাল ও খাঁটি। আর সামান্য কয়টা টাকা বাঁচাতে গিয়ে নিম্নমানের অথবা ভেজাল নারিকেল তেল কিনে আপনার স্বাস্থ্য, চুল ও তকের ক্ষতি করবেন না। আসুন জেনে নিই খাঁটি নারিকেল তেলে চেনার উপায়।
#খাঁটি_নারিকেল_তেল #চেনার_উপায়ঃ
খাঁটি নারিকেল তেল তার সুন্দর ঘ্রাণই বলে দিবে তেল খাঁটি কি না। আপনার আগের অভিজ্ঞতা থাকলে সহজেই বুঝতে পারবেন তেল খাঁটি কি না। এছাড়াও ভেজাল সনাক্তকরণের জন্য নারিকেল তেল ফ্রিজের নরমালে রাখুন ১.৫ থকে ২ ঘন্টা। যদি তেল পুরোটা জমে যায় তবে নির্ভেজাল। অন্য তেল মিশ্রিত থাকলে আলাদা একটি তরল লেয়ার থাকবে। যদি একেবারেই জমাট না বাধে তবে এতে নারিকেল তেলের ছিটে ফোটাও নইে।